নিজস্ব প্রতিবেদক
চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ও ভালো চাকরি দেয়ার নাম করে অবৈধ ভাবে বিদেশে পাঠিয়ে ৫ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে বাবুগঞ্জ উপজেলার রাছেল ও তার স্ত্রী রুমার বিরুদ্ধে। প্রতারণার শিকার ভুক্তভোগীর পরিবার এখন পথে বসার উপক্রম।
ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বানারীপাড়া উপজেলার পারভেজকে ৪ মাস আগে সৌদি আরবে নিজস্ব দোকানে ভালো বেতনে চাকরি দেয়ার নাম করে রাসেল ও তার স্ত্রী রুমা নানা প্রলোভন দেখায়। ফাঁদে পরে আত্মীয় স্বজনের কাছে ধার দেনা ও ব্যাংক, এনজিও থেকে ঋণ করে ৫ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা জোগাড় করে পারভেজের পরিবার রাসেলের স্ত্রী রুমার কাছে দেন। টাকা পেয়ে রাসেল ৫ লক্ষ ৭০ হাজার টাকার বিনিময়ে পারভেজ কে সৌদি আরব পাঠায়। সেখানে গিয়ে সে দেখতে পায় তার নিজস্ব কোনো দোকান নেই একটা স্টল ভাড়া নিয়ে একটা চেয়ার রেখে দিছে মাত্র।
পরবর্তীতে ভুক্তভোগী কাজের কথা বল্লে তাকে চার মাসেও কোনো কাজের ব্যবস্থা করে দেয়নি। এছাড়া ভুক্তভোগী সৌদি আরবে বৈধভাবে চলাচল করার জন্য আকামা করে দেয়নি রাসেল। ফলে পালিয়ে পালিয়ে থাকাতে হয়, কোন কাজ করতে পারে না। এ কারনে উপার্জন বন্ধ থাকায় বাড়িতে টাকা পাঠাতে পারে না ভুক্তভোগী উল্টো আরো বাড়ি থেকে টাকা পাঠাতে হয়।
কিছুদিন পর প্রতারক রাসেলের কাছে আকামা চাইলে সে টাকা বাড়ি থেকে এনে ভুক্তভোগীকে আকামা করতে বলে এবং পরবর্তীতে সেটা ফেরত দিবে কথা দেয়। ভুক্তভোগী দেশ থেকে টাকা এনে আকামা করে। কিছুদিন পরে টাকা চাইতে গেলে প্রতারক রাসেল সেই টাকাও দিতে অস্বীকার জানায়।
বর্তমানে ভুক্তভোগী স্বপ্ন পূরণের বদলে এখন কষ্টে দিনযাপন করছেন। এদিকে পরিবার নিঃস্ব হয়ে পথে বসার উপক্রম হয়েছে। বিদেশ থেকে টাকা পাঠাতে পারে না পারভেজ ফলে ঋণের টাকা পরিষদ করতে পারছে না পরিবার। এমন অবস্থায় পারভেজের দরিদ্র পরিবারটি অসহায় হয়ে পড়েছে। তারা এর সঠিক বিচার ও ক্ষতিপূরণ দাবি করছেন।
ভুক্তভোগীর মা জেসমিন বেগম বলেন, আমি বিদেশে যাওয়ার পক্ষে ছিলাম না। রাসেল ও তার বউ রুমা আমার ছেলেকে লোভ দেখিয়ে, ফুসলিয়ে সৌদিআরবে নেয়। বেশি বেতনের ভালো চাকরি দেয়ার কথা বইলা নিয়া এখন কোন কাজ দেয় নায় বাড়িতে টাকা পাঠাতে পারে না। আমি ঋণ করে বিদেশে যাওয়ার টাকা দিছি এখন এই টাকা আমি কিভাবে দিবো। আমি এর বিচার ও ক্ষতিপূরণ চাই।
তিনি আরও বলেন প্রতারক রাসেলের স্ত্রীর সাথে কথা বলার চেষ্টা করছি কিন্তু তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছে বার বার তাই আমরা এই প্রতারক দম্পতির বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
এ বিষয়ে প্রতারক রাসেলের এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, দেশে কর্মক্ষেত্র সংকটের ফলে অনেকেই বেকার হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। চাকরি যেন ‘সোনার হরিণ’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ সুযোগে রাছেল ও তার স্ত্রী বরিশালে বাসা ভাড়া নিয়ে বিদেশে ভালো চাকরি দেয়ার নামে প্রতারণার ফাঁদ পেতে বসে আছে। এই ফাঁদে পড়ে অনেকেই প্রতারিত হচ্ছেন। এতে অনেকে বিদেশে চাকরি পাওয়ার আসায় লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন।
প্রতারক দম্পতি এমন করে এলাকার অনেকের কাছ থেকে বিদেশে পাঠানোর নামে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
অভিযোগের ব্যাপারে প্রতারকের স্ত্রী রুমার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করতে চাইলে তার মোবাইল নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।