পল্লী অঞ্চল ডেস্ক
রোগীদের জন্য দুধ বরাদ্দ থাকলেও এক ফোঁটা পানিও কোনোদিন দেওয়া হয়নি
রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের জন্য প্রতিদিন ৭০০ গ্রাম করে দুধ বরাদ্দ থাকলেও বাস্তবে কোনোদিনও তাদের এক ফোঁটাও দুধ দেওয়া হয়নি। এমনকি সপ্তাহে একবার খাসির মাংস দেওয়ার কথা থাকলেও সেটাও বাস্তবায়ন হয় না। এসব অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার প্রমাণ মিলেছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অভিযানে।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ফরিদপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সরদার আবুল বাসারের নেতৃত্বে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে এ অভিযান চালানো হয়।
অভিযান শেষে সাংবাদিকদের সামনে এসব তথ্য তুলে ধরেন সরদার আবুল বাসার। তিনি বলেন, ‘হাসপাতালে প্রতিটি রোগীর জন্য প্রতিদিন সকাল ও বিকেলে ৩৫০ গ্রাম করে মোট ৭০০ গ্রাম দুধ সরবরাহ করার কথা। কিন্তু ওয়ার্ড মাস্টার নিশ্চিত করেছেন, এই হাসপাতালে কোনোদিনও রোগীদের দুধ দেওয়া হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘শুক্রবার রোগীদের খাসির মাংস দেওয়ার নিয়ম থাকলেও বাস্তবে তা দেওয়া হয় না। ডায়েট চার্ট অনুযায়ী আজ ৮১ জন রোগীর জন্য ২২ কেজি ২০০ গ্রাম মুরগির মাংস সরবরাহ করার কথা ছিল। কিন্তু আমরা মাত্র ১৫ কেজি ২০০ গ্রাম মাংস পেয়েছি। অর্থাৎ ৭ কেজি কম দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া চিকিৎসক উপস্থিতি নিয়েও গুরুতর অনিয়ম ধরা পড়ে। সরদার আবুল বাসার বলেন, ‘হাসপাতালে ৩২ জন চিকিৎসক থাকার কথা। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ৪ জন বদলি হয়েছেন, একজন ছুটিতে আছেন। তাহলে উপস্থিত থাকার কথা ২৭ জনের। কিন্তু আমরা পেয়েছি মাত্র ১৭ জন চিকিৎসক। বাকি ১০ জন অনুপস্থিত ছিলেন।’
দুদক কর্মকর্তা জানান, খাবার সরবরাহে অনিয়ম, চিকিৎসকদের অনুপস্থিতি এবং রোগীদের অধিকার লঙ্ঘনের বিষয়গুলো কমিশনকে জানানো হবে। এরপর আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই অভিযানে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের চিত্র স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, যা দ্রুত সংশোধন না হলে রোগীদের কষ্ট বাড়তেই থাকবে বলে আশঙ্কা সচেতন মহলের।